প্রবাসে মারা গেলে সরকারিভাবে মরদেহ আনবেন যেভাবে


প্রবাসীরা একদিকে যেমন রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে তেমনই সেই রেমিট্যান্স আয় করতে গিয়ে ঝরে যায় অনেক প্রবাসীর প্রাণ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে এখন পর্যন্ত সরকারি খরচে প্রবাসীদের লাশ এসেছে ২ হাজার ৭৩৫টি। যা পুরোটাই সরকারের খরচে নিয়ে আসা হয়েছে। বিদেশে মৃত্যু হলে অনেকেই দালাল কিংবা রিক্রুটিং এজেন্সির শরণাপন্ন হন লাশ আনার জন্য। তাতে অর্থেরও খরচ হয়। তবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মাধ্যমে আবেদন করা হলে কোন টাকা লাগে না মরদেহ আনতে।
বিদেশের মাটিতে প্রবাসীর মৃত্যুর খবর শোনার পর ব্যক্তির পরিবার ও নিকটাত্মীয়রা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান কিভাবে এবং কতো দ্রুত সময়ে মরদেহ দেশে আসবে। অনেকেই বিদেশ থেকে মরদেহ আনার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানেন না। যেকারণে মাসের পর মাস বিদেশের মর্গে পড়ে থাকে আমাদের অনেক প্রবাসীদের মরদেহ। আবার অনেকের মরদেহ বিদেশেই দাফন করা হয়। শেষবারের মত প্রিয়জনের মুখটি পর্যন্ত দেখতে পারেনা পরিবার।
প্রবাসে কোনো বাংলাদেশি মারা গেলে, তার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনা; মৃত ব্যক্তির পরিবার বা নিকটাত্মীয়ের ইচ্ছানুযায়ী লাশ শনাক্ত বা দাফনের জন্য- প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সমন্বয় করে থাকে। তবে সেক্ষেত্রে মৃত কর্মীকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্য হতে হবে। মরদেহ দেশে আনার জন্য আবেদন তিনভাবে করা যায়। যদি মৃত কর্মীর পরিবার ঢাকার বাইরে থাকেন তাহলে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি (ডেমো) অফিসের মাধ্যমে কিংবা সরাসরি ইমেইলের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া সরাসরি ওয়েজ আর্নারস কল্যাণ বোর্ডের ঢাকা হেড অফিসেও জমা দেওয়া যায়।
এক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির পরিবারকে যাবতীয় কাগজপত্র নিয়ে বোর্ডে একটি আবেদন করতে হয়। কল্যাণ বোর্ড সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের সঙ্গে সমন্বয় করে নিয়ে আসে। আর লাশ দেশে আসার পর দাফন বাবদ ২৫ হাজার টাকা এবং পরে আর্থিক অনুদান হিসেবে ৩ লাখ টাকা সরকার দিয়ে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মৃতের পরিবারের মতামত সাপেক্ষে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড মৃতদেহ স্থানীয়ভাবে দাফনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে।
লাশ দেশে আনার জন্য যেসব তথ্য জমা দিতে হবে তার মধ্যে আছে জাতীয় পরিচয়পত্র, পরিবারের সদস্য সনদপত্র অর্থাৎ ওয়ারিশ সনদ, লাশ পরিবহন ও দাফন খরচের অর্থ গ্রহণের জন্য ক্ষমতা অর্পণপত্র। এর সঙ্গে মৃত কর্মীর পাসপোর্টের কপি, ইকামা বা যে দেশে ছিলেন ওই দেশের রেসিডেন্স কার্ডের কপি এবং প্রবাসে তার সঙ্গে অবস্থানরত পরিচিতিজনের মোবাইল নম্বর। এসব তথ্য সহ আবেদনের পর সাধারণত তিন কর্মদিবসের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দূতাবাসে প্রেরণ করে থাকে কল্যাণ বোর্ড। সরকারি খরচে মরদেহ আনা এবং ৩ লাখ টাকা সরকারী অনুদান আদায়ের জন্য আবেদন ফরম লিংক এখানে।
আরো পড়ুন:
ওমানে সিগারেট সেবনে নতুন নিষেধাজ্ঞা
নোয়াখালীতে ওমান প্রবাসীর স্ত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে ওমান থেকে আনা হচ্ছে এলএনজি
বিদেশগামী কর্মীদের জন্য নতুন নিয়ম চালু করলো সরকার
সৌদিতে কর্মী পাঠাতে জটিলতা, নিতান্তই ভুল বোঝাবোঝি বললেন
